খাল নদী বিল পরিবেষ্টিত গোপালপ্ুরের লোকচরিত্র অত্যন্ত সরল ও স্বচ্ছ। অল্পে তুষ্টি, পরমত সহিষ্ণুতা এবং সরল জীবন-যাপন গোপালপুরের লোককচরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট। তারা ভদ্র, বিনয়ী এবং অতিথি পরায়ণ। পারস্পরিক সংঘাত জটিলতা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতিতে বিশ্বাসী। দীর্ঘদিন উন্নয়ন বঞ্চিত থেকে এলাকার মানুষজন আলোর পথে এগিয়ে আসার জন্য উম্মুখ। এরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সহজ সরল। যুক্তিসংগত সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থাশীল এলাকার জনগণ জনকল্যাণমূলক যে কোন পদক্ষেপের সাথে একমত। তারা সুস্থ সামাজিক চেতনায় বিশ্বাসী। এখনও তারা বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়ে আদালত পর্যন্ত না গিয়ে দায়িত্বশীল সমাজপতিদের মাধ্যমে নিজেদের সমস্যা নিরসন করে থাকেন। গোপালপুরের ল উপজেলার সকল ইউনিয়নে এ চিত্র লক্ষ্যণীয় হলেও কাশিল ইউনিয়নে এ চিত্র একটু ভিন্ন। তারা সহজাতভাবে একটু স্বাধীনচেতা এবং প্রতিবাদী। কিছু কিছু লোকের মধ্যে কান কথা বিশ্বাস করার প্রবণতা রয়েছে। তবে তা সময়, যুক্তি এবং প্রমাণে নিরসন হতেও সময় লাগেনা। বাসাইলের নদী, মাটি, সবুজ ধানক্ষেত বাসাইলের মানুষকে যান্ত্রিক কৃত্রিমতা থেকে এখনও দুরে রেখেছে। তাই বাসাইলের লোকচরিত্র এখনও মোহনীয় এবং সাবলীল।
সামাজিক রীতি-নীতিতে গোপালপুরের ঐতিহ্য রয়েছে। যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম জলপথ হওয়ায় এ অঞ্চলে আবহমান কাল থেকে মেয়ে এবং জামাইকে নাইওর আনার ক্ষেত্রে নৌকা ব্যবহার হতো। এজন্য বর্ষাকাল ছিল এ অঞ্চলের উৎসব কাল। সাধারণত অতিথি সেবা এবং বেড়ানোর ক্ষেত্রে বাসাইলের লোকেরা বর্ষাকালকে বেছে নিতেন। কখনও কখনও যে এর ব্যত্যয় হতো না তা নয়। শুকনো মৌসুমে নববধূকে বাড়ীতে নেবার ক্ষেত্রে ডুলি এবং পালকির প্রচলন ছিল। বিশালদেহী উড়িয়া বেহারাগণ পালকি কাঁধে নিয়ে যেতেন গন্তব্যের দিকে। রাস্তা ঘাটের ফলে এখন আর পালকি-ডুলির প্রচলন নেই বটে তবে অতিথি আপ্যায়নের জন্য এখনও বর্ষাকালই উৎকৃষ্ট সময়। এখানে অতিথি আপ্যায়নে খাবার শেষে দুধ ভাত এবং কলা ছিল অত্যাবশ্যকীয়। এখন অবশ্য এর প্রচলন কমলেও বাসাইলের ঐতিহ্য মন্ডিত পুরাতন বাড়িসমূহে এর প্রচলন এখনও রয়েছে। নতুন আত্মীয় বেড়াতে এলে বিদায়ের সময় প্রত্যেককে উপঢৌকন স্বরূপ বস্ত্র ও অন্যান্য সামগ্রী প্রদানের রেওয়াজ এখানে ছিল।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস